নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটে প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সিসিকের পক্ষ থেকে চলছে সচেতনতামূলক প্রচারণা। কিন্তু এরপরও তৈরি হচ্ছে না জনসচেতনতা। নগরীর বাসাবাড়িতে মিলছে এডিস মশার লার্ভা। এই অবস্থায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নগরবাসীর মাঝে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে এসএসসি মিলেনিয়াম ব্যাচের উদ্যোগে তিন মাস ব্যাপী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (৬ আগস্ট) দুপুর ১টায় সিলেট নগরীর সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।
রোববার দুপুরে শিক্ষার্থীদের নিয়ে সমাবেশ শেষে সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা পরিচ্ছন্ন ও মশক নিধনের মাধ্যমে শুরু হয় পাইলট প্রকল্পের কাজ। এসময় স্কুলের পাশের একটি বাসার দেয়ালের ভেতর পাওয়া যায় এডিস মশার লার্ভা। পরে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা সেগুলো ধ্বংস করেন।
এ প্রসঙ্গে ‘সিলেট এসএসসি মিলেনিয়াম ব্যাচ’র সমন্বয়ক আমজাদ হোসেইন চৌধুরী বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রেসক্লাবের সহযোগিতায় আমরা পাইলট প্রকল্প হিসেবে ২০নং ওয়ার্ডে কাজ শুরু করেছি। আগামী ৩ মাস আমরা এই ওয়ার্ডে কাজ করবো। সপ্তাহের ৫ দিন ওয়ার্ডের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও ২ দিন মশক নিধনের ঔষধ ছিটানো হবে। শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদেরকে সচেতন করা গেলে আমরা একটি সচেতন প্রজন্ম পাব। এই উদ্দেশ্য থেকে আমাদের এই কার্যক্রমে শিশুদের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে নিযুক্ত করেছি। পাইলট প্রকল্প সফল হলে আমরা সিটি কর্পোরেশনকে এই পদ্ধতি অনুসরণের লিখিত প্রস্তাব দেব।
২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘নগরবাসীকে অনেকভাবেই সচেতন করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু যত্রতত্র ময়লা ফেলার মানসিকতা পরিবর্তন করা যাচ্ছে না। শিশুদের দিয়ে তাদের পরিবারকে সচেতন করার পরিকল্পনাটি খুবই চমৎকার ও কার্যকর হবে বলে আমি মনেকরি।’
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘একটি পরিবারে সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর সদস্য হচ্ছে শিশুরা। তারা যখন কোন বিষয়ে বায়না ধরে তখন পরিবারের বড়রা তা মানতে বাধ্য হন। আজকে যেসব শিশু শুভেচ্ছা দূতের দায়িত্ব নিয়েছে তারা যখন পরিবারে গিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে বলবে তখন অবশ্যই এর ইতিবাচক ফল আসবে।’
সচেতনতা বৃদ্ধি ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিতে তিনি আরো বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। সবার আগে এডিস মশার উৎসস্থল ধ্বংস করতে হবে। প্রতিদিনই নগরের কোনা কোনো এলাকায় মশকনিধন অভিযান অব্যাহত আছে। এডিস মশা নিধনে আমাদের ভলান্টিয়ার ডোর টু ডোর কাজ করছে।
এসময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদের বাসা-বাড়ি তোমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবে। তোমাদের বাসার আশে-পাশের জায়গা গুলোতে যেনো কোনোভাবেই বৃষ্টির পানি জমে না থাকে সেই বিষয়ে খেয়াল রাখবে।
সচেতনতা বৃদ্ধি ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন- সিসিকের ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম নবেল, সিসিকের ৩৪,৩৫,৩৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর হাজেরা বেগম, সিলেট এসএসসি মিলেনিয়াম ব্যাচ’র সমন্বয়ক আমজাদ হোসেইন চৌধুরী রাশেদ, তুহিনুল হক তুহিন, ডা. সাহেদ আহমদ, আব্দুল আহাদ, আতাউল গনি ইমন, হিরা সরকার, কবির চৌধুরী, মিলু চৌধুরী, শিমুল আহমদ, মহি উদ্দিন ফয়সল, ইমন আহমদ, শায়েল আহমেদ, মীর্জা হুমায়ুন কবীর জনি, হারিছ আলী প্রমুখ।
এদিকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, সহ-সভাপতি সাঈদ চৌধুরী টিপু, সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রাসেল, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল আহাদ, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মিঠু দাস জয়, নির্বাহী সদস্য রণজিত কুমার সিংহ, সদস্য মামুন হাসান।
টুডেসংবাদডটকম/ডেস্ক/এ/