যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্য আমেরিকায় তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের সফর সামনে রেখে চীন যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, তা দ্বীপরাষ্ট্রটির নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার হুমকি তীব্রতর করেছে। তাইওয়ান থেকে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন শিল্প যুক্তরাষ্ট্রে ‘স্থানান্তর’ করার চলমান মার্কিন প্রচেষ্টা তাইওয়ানের অর্থনীতিকে যে পঙ্গু করে দিতে পারে, সে বিষয়েও চীন তার হুঁশিয়ারিতে আলোকপাত করেছে।
তাইওয়ানের নিরাপত্তা মূলত দুটি প্রধান ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। একটি হলো স্বশাসন ও অপরটি হলো অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। তাইওয়ান যে কার্যত সার্বভৌমত্ব বজায় রেখে চলছে, তাকে তারা আলোচনার ঊর্ধ্বের বিষয় মনে করে। আর এই সার্বভৌমত্বের বোধ চীনকে, অন্তত বিদ্যমান সি চিন পিংয়ের নেতৃত্বাধীন চীনকে ঠান্ডা রাখার সব সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছে। তবে চীনের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক তীব্র জবরদস্তির মুখেও তাইওয়ান তার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে সরছে না।
ইলেকট্রনিক সেমিকন্ডাক্টর প্রস্তুতকারী দেশগুলোর মধ্যে তাইওয়ানের প্রাধান্য ধরে রাখাটা দেশটির অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত জরুরি। বিশ্বে যত সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদিত হয়, তার ৬০ শতাংশ উৎপাদন করে তাইওয়ান। এ ছাড়া দেশটি বিশ্বের মোট উৎপাদিত হাই-এন্ড চিপের ৯০ শতাংশ উৎপাদন করে থাকে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তার নিজ ভূখণ্ডে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে উৎসাহী হয়েছে এবং চিপস অ্যান্ড সায়েন্স অ্যাক্ট শীর্ষক আইনের মাধ্যমে এ খাতে তারা ২৮ হাজার কোটি ডলারের তহবিল সরবরাহ করেছে। এটি তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির (টিএসএমসি) দীর্ঘমেয়াদি প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে খর্ব করার হুমকি দিচ্ছে এবং খুব স্পষ্টভাবেই দ্বীপরাষ্ট্রটির তথাকথিত সিলিকন শিল্ডকে গুরুতর হুমকির মুখে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন বাড়ানোর এ ঝোঁক তাইওয়ানকে বিচলিত করে তুলছে। চীনের উন্নত চিপ উৎপাদন ঠেকানোর জন্য বাইডেন প্রশাসন চীনা পণ্য রপ্তানিতে যে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে, সে বিষয়ে টিএসএমএসির প্রতিষ্ঠাতা মরিস চ্যাং সম্প্রতি সমর্থন দিয়েছেন। তবে চ্যাং বলেছেন, বাইডেন সরকার কেন এই সেমিকন্ডাক্টর প্রস্তুতকারী শিল্পকে এশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যেতে চাচ্ছে, তা তিনি এখনো বুঝে উঠতে পারেননি।